আলদ্দিন ওয়াজেদ:
মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করেছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি)। কোনো দালাল নয়, ডিপিডিসি’র ১৬১১৬ নাম্বারে ফোন করলে পৌঁছে যাবে ভ্রাম্যমাণ বিদ্যুৎসেবা টিম। কয়েকজন প্রকৌশলীর সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে এই টিম। ১৭ মার্চ শুরু হয়ে ২৮ মার্চ পর্যন্ত চলবে এই সেবা।
ডিপিডিসির এমন উদ্যোগের মূল লক্ষ্যে হলো- গ্রাহকের দোরগোড়ায় নিরবিচ্ছিন্ন ও মানসম্পন্ন বিদ্যুৎসেবা পৌঁছে দেয়া। বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর মধ্যে ডিপিডিসি সর্ববৃহৎ এবং সেবা প্রদানের ক্ষেত্রেও অগ্রগামী। নতুন নতুন প্রযুক্তির সন্নিবেশনের মাধ্যমে গ্রহকসেবার মান উন্নয়নে আমুল পরিবর্তন আনা এনেছে প্রতিষ্ঠানটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুসজ্জিত তিনটি ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের মাধ্যমে ডিপিডিসির ৩৬টি এনওসিএস বিভাগে গ্রাহকদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে বিদ্যুৎসেবা প্রদান করা হবে। তাই গ্রহকদের আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না। আবেদন করে এক দিনে পাওয়া যাবে বিদ্যুৎ সংযোগ। গুনতে হবে না বাড়তি টাকা।
ভ্রাম্যমাণ বিদ্যুৎসেবার আওয়ায় যেসব সেবা পাবেন গ্রাহকরা: মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে সুসজ্জিত তিনটি ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের মাধ্যমে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের ৩৬টি এনওসিএস অফিসে এই বিশেষ সেবা প্রদান করা হবে। এখন থেকে আর বিদ্যুৎ সংযোগ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে দিনের পর দিন ঘুরতে হবে না। আবেদন করে একদিনেই মিলবে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ।
এছাড়া গ্রাহকদের কথা বিবেচনায় আরো নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান। তিনি জানান, ভ্রাম্যমাণ বিদ্যুৎসেবার আওতায় নিম্নচাপ গ্রাহকদের নতুন সংযোগ ও লোডবৃদ্ধি, মিটারের নাম পরিবর্তন, বিল সংশোধন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান দেওয়া হবে। এছাড়া প্রি-পেইড মিটারের গ্রাহকদের ভেন্ডিং সংক্রান্ত জটিলতাসহ তাৎক্ষণিক অভিযোগ গ্রহণ ও সমাধান করা হবে। সেই সঙ্গে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা সম্পর্কে গ্রাহকদের সচেতন করা হবে এই সেবার মাধ্যমে। ইতোমধ্যে এই সেবাদান শুরু হয়েছে। গত দুদিন ধরে চলছে এই কার্যক্রম। প্রতিদিন শত শত গ্রাহক ভিড় করছেন ভ্রাম্যমাণ বিদ্যুৎসেবার ভ্যানে।
ডিপিডিসর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন মোহম্মদপুরের আনিসুর রহমান নামের এক গ্রাহক। তিনি বলেন, ‘অভিনন্দন ডিপিডিসির এমডিসহ সকল কর্মকর্তাকে। তারা এই উদ্যোগ দিয়েই প্রমাণ করেছেন সুষ্ঠু বিদ্যুৎসেবা পেতে বাড়তি টাকার দরকার হয় না।’
এ ব্যাপারে বনশ্রী জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুজ্জামান বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ বিদ্যুৎসেবা সত্যিকার অর্থে একটি ভালো উদ্যোগ। গ্রাহকরা কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়া এই সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। আগামী ৩১ মার্চ মেরাদিয়া স্কুল মাঠে বনশ্রী জোনে থাকবে ভ্রাম্যমাণ টিম। আমার মনে হচ্ছে, সেদিন গ্রাহক উপস্থিতির লম্বা লাইন পড়ে যাবে। গ্রাহকরা বিদ্যুৎসেবা পেয়ে সন্তুষ্ঠ হবে বলে আশা করছি। আমরা কর্মকর্তা নই, গ্রাহকদের সেবক হয়ে কাজ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
এ ব্যাপারে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ গ্রাহক বিদ্যুৎসেবায় খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। এতে গ্রাহকদের কোনো প্রকার ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না। আবেদনে কাগজপত্র সঠিক থাকলে একদিনে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে যাচ্ছেন গ্রাহকরা। ইতোমধ্যে প্রায় ২৩০টি নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন পড়েছে। কাগজপত্র যাছাই-বাছাই শেষে সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগামী রোববার থেকে অভিযোগ বক্স খোলা হবে। গ্রাহকরা সহজেই অভিযোগ করতে পারবেন। তাৎক্ষণিক সেসব অভিযোগের সমাধান করা হবে। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
বিকাশ দেওয়ান জানান, বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এড়ানো এবং ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসকল্পে নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য নানা বিষয়ে গ্রাহকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যাতে করে গ্রাহকরা দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়।
এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, ‘গ্রাহকদের দোরগোড়ায় নিরবিচ্ছিন্ন ও মানসম্পন্ন বিদ্যুৎসেবা পৌঁছে দিতে ভ্রাম্যমাণ বিদ্যুৎসেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি ডিপিডিসির একটি ভালো উদ্যোগ। এখন থেকে আর কোনো ভোগান্তি নয়। তাৎক্ষণিক পাওয়া যাবে বিদ্যুৎসেবা।’